Notice Update

রবীন্দ্র নাথ ত্রিবেদী (জন্ম শেরশাহী, মালদা, মাতুলালয়ে ১০ মার্চ ১৯৪৪, শুক্রবার ২৭ ফায়ূন ১৩৫০,দোলপূর্ণিমা ;পৈত্রিক নিবাস তালমা, ফরিদপুর)। ফরিদপুর জেলা স্কুল, রাজেন্দ্র কলেজের ছাত্র ও ভারতের মাদুরাই কামরাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোেষ্ট গ্রাজুয়েশন এবং সাংবাদিকতায় উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। বিসিএস তথ্য ক্যাডারের সদস্য, বাংলাদেশ সরকারের অবসর প্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব (ও এস ডি)। তিনি গবেষক,মুক্তিযুদ্ধের লেখক ও কলামিষ্ট হিসাবে দেশে ও বিদেশে পরিচিত। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের ও মুজিবনগরে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠায় তিনি একজন সংগঠক-মুক্তিযােদ্ধা কর্মকর্তা। একাত্তুরে ১০ এপ্রিল ফরিদপুরে গােপন বৈঠকের পর জনাব আব্দুর রব সেরনিয়ামত এমএনএ , ফণী মজুমদার এমপিএ এবং এডভােকেট ইউসুফ হােসেন হুমায়ুন সহ তিনি প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ সাথে মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র ও কৌশল নিয়ে আলােচনা জন্য ১৫ এপ্রিল ১৯৭১ তারিখে কলকাতায় পৌঁছেন। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার শপথগ্রহণ ও ১৮ এপ্রিল কলকাতাস্থ পাকিস্তানী উপ-দূতাবাস প্রধান জনাব হােসেন আলীর বাংলাদেশের স্বাধীনতা পক্ষে প্রথম বাংলাদেশ মিশন ঘােষণা অনুষ্ঠানে ছাত্রনেতা নুর-এ-আলম সিদ্দিকীসহ সক্রিয়ভাবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম কামরুজ্জামান মহােদয়ের জনসংযোেগ ও শরণার্থী সাহায্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় কমিটির বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন। স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম কামরুজ্জামান মহােদয়ের নির্দেশে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ মিশন ও ভারত সরকার থেকে যশাের জেলা প্রশাসনে রিলিফ, যানবাহন, সরবরাহ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসনে বিশেষ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সংশিষ্ট তথ্য অফিসার পদে দায়িত্ব পালন করেন । ১৬ আগষ্ট -৭ নভেম্বর ১৯৭৫ রবীন্দ্র নাথ ত্রিবেদী বঙ্গভবনে তথ্য অফিসার দায়িত্ব পালন করেন। তার সেসব দিনের অভিজ্ঞতা সম্প্রতি প্রকাশিত ‘মার্ডার মেইহাম এন্ড পলিটিকস্ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক বইয়ে প্রকাশ করেছেন। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি বিচারপতি জনাব সাহাবুদ্দীন আহমদের প্রেস সচিব (১৯৯৯-২০০১) ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অতিরিক্ত প্রেস সচিব (১৯৯৭-১৯৯৮) পদে দায়িত্ব। পালন করেছিলেন।

আবুল কাসেম ফজলুল হক ময়মনসিংহ জিলা স্কুল, ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষা লাভ করেন। তাঁর গোটা পেশাজীবন কাটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগে গবেষণা ও শিক্ষকতায়। ২০১১ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। ছাত্রজীবনে তিনি কবিতা, ছোটগল্প ও প্রবন্ধ লিখেছেন এবং পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ করেছেন। তখন তাঁর লেখার বিষয়বস্তু ছিল সৌন্দর্য, প্রেম, প্রকৃতি ও জীবনদর্শনের অনুসন্ধিৎসা। ১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সময় তাঁর মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার উন্মেষ ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র থাকাকালে তিনি ১৯৬০-এর দশকে ছাত্র-আন্দোলনের প্রগতিশীল ধারায় সক্রিয় ছিলেন। সংস্কৃতি সংসদ, সুকান্ত একাডেমি, উন্মেষ, বাংলাদেশ লেখক শিবির, স্বদেশ চিন্তা সঙ্ঘ প্রভৃতি সংগঠনে থেকে তিনি বাংলাদেশের প্রগতিশীল চিন্তা ও কর্মে সক্রিয় ছিলেন এবং সর্বজনীন কল্যাণ ও প্রগতিশীল নতুন ভবিষ্যতের আশায় ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করে লিখে চলছেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি ঢাকা শহরে থেকে পরিচিত ও স্বল্পপরিচিত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রধানত অর্থ সংগ্রহ করে দিয়ে ও আশ্রয় দিয়ে সহায়তা করেছেন। আবুল কাসেম ফজলুল হক ১৯৬০-এর দশক থেকে নতুন রেনেসাঁস আকাক্সক্ষা করেন। তিনি মনে করেন ভালো কিছু করতে হলে হুজুগ নয়, দরকার গণজাগরণ। সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস ইত্যাদি সকল বিষয়ে তাঁর লেখায় প্রগতির তাড়না কাজ করে।

আফসান চৌধুরী চার দশকের অধিক সময় ধরে। 'একাত্তরের ইতিহাস নিয়ে কাজ করছেন। তিনি হাসান হাফিজুর রহমানের অধীনে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের দলিলপত্র' প্রকল্পের একজন গবেষক ছিলেন। স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে নির্মিত চার খণ্ডের। ‘বাংলাদেশ একাত্তর’ (২০০৭) বইগুলাের সম্পাদক ও সহ-রচয়িতা ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালের সাক্ষাঙ্কার সংগ্রহ' (২০১৮) এবং গ্রামের জনগােষ্ঠীর একাত্তরের অভিজ্ঞতার ওপর গ্রামের একাত্তর' (২০১৯) বই দুইটি সম্পাদনা করেন ২০২০ সালে তিনি হিন্দু জনগােষ্ঠীর একাত্তর’ এবং ১৯৭১ গণনির্যাতন-গণহত্যা কাঠামাে, বিবরণ ও পরিসর’ গ্রন্থ দুইটি সম্পাদনা করেন। ১৯৭১ নিয়ে আফসান চৌধুরী বিবিসির জন্য ৫টি রেডিও ডকুমেন্টারি এবং তাহাদের যুদ্ধ' (২০০১) ও গ্রামের মুক্তিযােদ্ধা' (২০১৯) নামে দুইটি ভিডিও ডকুমেন্টারি ' নির্মাণ করেছেন। ২০২০ সালে তিনি একাত্তরের নারীযােদ্ধা’সহ তিনটি ডকুমেন্টারি নির্মাণ করেছেন ' একই বছরে তার লেখা ‘বাংলাদেশ ও শেখ মুজিব। '(১৯৩৭-১৯৭১)' গ্রন্থটি প্রকাশ পায়। ২০২১ সালে প্রকাশের জন্য তিনি মুজিবনগর : কাঠামাে, কার্যবিবরণ ও অভিজ্ঞতা, মুক্তিযুদ্ধের সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরতে ‘একাত্তরপিডিয়া’ এবং নারীর একাত্তর’ গ্রন্থ তিনটি সম্পাদনা করছেন। সাংবাদিকতা ও গবেষণার পাশাপাশি তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

মাহবুব তালুকদার জন্ম ১লা জানুয়ারি ১৯৪১। কর্মজীবনের প্রারম্ভে দৈনিক ইত্তেফাক-এ সাংবাদিকতা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় নিয়োজিত থাকলেও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকালে তিনি মুজিবনগর সরকারে যোগদান করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশের প্রথম চারজন রাষ্ট্রপতির অধীনে তিনি সরকারি দায়িত্ব পালনের সুযোগ পান এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় কাজ করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। মাহবুব তালুকদারের বইয়ের সংখ্যা ৪১। তাঁর উল্লেখযোগ্য গল্পগ্রন্থগুলো হচ্ছে : মূর্ত ও বিমূর্ত, প্রকাশ্য গোপন, স্বপ্ন জড়ানো মানুষ, ইতির ইতিকথা, অরূপ তোমার বাণী।

মওদুদ আহমদ ১৯৪০ সালের মে মাসের ২৪ তারিখ নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগণঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং মা বেগম আম্বিয়া খাতুন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে মওদুদ আহমেদ চতুর্থ। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিনি বিএনপির ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। অষ্টম জাতীয় সংসদে তিনি আইন ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মান পাশ করে বৃটেনের লন্ডনস্থ লিঙ্কন্স্‌ ইন থেকে ব্যারিস্টার-এ্যাট-ল' ডিগ্রি অর্জন করেন। লন্ডনে পড়াশুনা করে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন। তিনি ব্লান্ড ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলনে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ব্যারিস্টার মওদুদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১-এ ইয়াহিয়া খান কর্তৃক আহুত গোলটেবিল বৈঠক তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ছিলেন। ১৯৭৭-৭৯ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারের মন্ত্রী ও উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৭৯ সালে তিনি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং তাকে উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮১ সালের মে মাসে জিয়াউর রহমান নিহত হন এবং এক বছরের ভেতর হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেন। ১৯৮৫ এর নির্বাচনে মওদুদ আহমেদ আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং সরকারের তথ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এক বছর পর ১৯৮৬ এ তাকে আবার উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৮৯ সালে তাকে শিল্প মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং এরশাদ তাকে উপ-রাষ্ট্রপতি করেন। ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকার জনরোষের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে ১৯৯১-এ মওদুদ আহমেদ আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালেও তিনি বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পাঁচবার মওদুদ আহমেদ নোয়াখালী জেলার কম্পানীগঞ্জ উপজেলা থেকে নির্বাচিত হন। অষ্টম জাতীয় সংসদে মওদুদ আহমেদ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। মন্ত্রীত্ব ছাড়াও মওদুদ আহমেদ জিয়াউর রহমানকে বিএনপি প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেন। এই দলের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি এরশাদের জাতীয় পার্টির সংগঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

Bologna
Bologna

Moudud Ahmed(মওদুদ আহমদ)

Date Of Birth 24 May, 1940

সাম্প্রতিক বাংলা সাহিত্যের গৌরবময় একটি নাম হাসান আজিজুল হক। ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বর্ধমান জেলার যবগ্রামে তার জন্ম । নিজের গ্রাম থেকে স্কুলের পড়া সাঙ্গ করে ওপার-বাংলায় চলে যান। তিনি, দর্শনশাস্ত্রের পড়াশোনার পর অধ্যাপনা করেন সেখানকার কয়েকটি কলেজে। ১৯৭৩ সাল থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনের অধ্যাপক, এখন অবসরপ্রাপ্ত। অধ্যাপনার সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘকাল অনেক গল্পের স্ৰষ্টা তিনি। গল্প অনেক লিখেছেন, কিন্তু, রহস্যময় কোনো কারণে, উপন্যাস-লেখায় বিশেষ আগ্ৰহ দেখান নি প্ৰতিভাবান এই কথাসাহিত্যিক । এ-বইটি প্ৰকাশিত হবার সঙ্গে সঙ্গে পাঠকসমাজের উৎসুক প্রতীক্ষার যেন অবসান হলো, আমাদের হাতে এসে পৌঁছল হাসান আজিজুল হকের হৃদয়স্পশী এই উপন্যাস : ’আগুনপাখি’ ।